‘ছাত্ররা বাসের দরজায় ছিলেন, একজনকে বাঁচাতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট আরেকজন’

সংবাদ

তিন শিক্ষার্থীর মরদেহ তাদের পরিবার ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ময়নাতদন্ত ছাড়াই স্বজনদের কাছে সন্ধ্যায় বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।‘ছাত্ররা বাসের দরজায় ছিলেন, একজনকে বাঁচাতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট আরেকজন’

গাজীপুর ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির নিহত তিন শিক্ষার্থী (বাম থেকে) মুবতাছিন রহমান মাহিন, মীর মোজাম্মেল নাঈম ও জোবায়ের আলম সাকিব।

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম

Published : 23 Nov 2024, 09:19 PM

Updated : 23 Nov 2024, 09:47 PM

facebook sharing button
twitter sharing button
sharethis sharing button

গাজীপুর ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির শিক্ষার্থীরা বনভোজনে যাওয়ার পথে বিআরটিসির যে দ্বিতল বাসটি বিদ্যুতায়িত হয় তার মধ্যে যারা দরজার কাছে ছিলেন তারা বেশি আহত হন বলে একজন শিক্ষক জানিয়েছেন।

শনিবার সকালে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলায় ‘মাটির মায়া’ রিসোর্টে যাওয়ার পথে বাসটি রাস্তায় বিদ্যুতায়িত হয়। এর মধ্যে তিন শিক্ষার্থী মারা যান এবং আহত ছয়জনকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

পিকনিক বাস বিদ্যুৎস্পৃষ্টে তিন ছাত্রের মৃত্যু: যা বলছে বিশ্ববিদ্য

গাজীপুরে পিকনিক বাস বিদ্যুতায়িত, বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ ছাত্রের মৃত্যু

পিকনিক বাস বিদ্যুৎস্পৃষ্টে তিন ছাত্রের মৃত্যু: যা বলছে বিশ্ববিদ্য

নিহত শিক্ষার্থীরা হলেন- মীর মোজাম্মেল নাঈম (২৩), জোবায়ের আলম সাকিব (২২) ও মুবতাছিন রহমান মাহীন (২২)। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেকানিক্যাল অ্যান্ড প্রোডাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।

ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির প্রভাষক মোহতাসিম মাশফি বলেন, “পিকনিকের আনন্দময় যাত্রা মুহূর্তেই পরিণত হয় বিষাদে। এমনটি আমাদের কাম্য ছিল না।

“আমি যেটুকু শুনেছি, যখন ছাত্ররা বাসের হ্যান্ডেল ধরে ছিল তখন সেটা বিদ্যুতায়িত হয়ে যায়। তখন মাহিন আহত হলে তাকে বাঁচাতে গিয়ে সাকিবও আহত হয়। নাঈমের বিষয়টি আমার জানা নেই।”

প্রভাষক বলছিলেন, “এমন মৃত্যু আমরা কিভাবে মেনে নেব বলেন? এটা তো আজকে হওয়া কথা ছিল না।”

দুপুরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আহতদের দেখতে আসেন উপাচার্য অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম খানসহ অন্যরা।

এ সময় উপাচার্য সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বলেন, “এটি অত্যন্ত মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। রাস্তায় বের হলে যদি এরকম হয়, তাহলে এ দায়িত্বটা কার অপনারাই ভালো বুঝেন। আমি আসলে কাউকে সরাসরি দায়ী করতে চাই না।

“ছাত্ররা বাইরে যাবেন এটাই স্বাভাবিক, পিকনিকে যাবে তাও স্বাভাবিক। একটা ছেলে গাড়িতে বসে বা দাঁড়িয়ে থেকেও যদি তার জীবনের নিরাপত্তা না থাকে তাহলে কী করবে? এটা তো এমন দুর্ঘটনা না যে মুখোমুখি সংঘর্ষ কিংবা বাসটা উল্টে পড়ে গিয়েছে। সে গাড়িতেই আছে কিন্তু বিদ্যুতায়িত হয়ে মারা গেছে তাহলে বুঝতেই পারছেন দায়-দায়িত্ব কার।

“আর যেন এভাবে প্রাণ না যায় ভবিষ্যতে রাস্তা-ঘাট যেন ক্লিয়ার থাকে, বিদ্যুতের তার যেন যথেষ্ট উচ্চতায় থাকে এবং সেগুলো যেন লিকেজ না থাকে কর্তৃপক্ষকে নজর রাখতে হবে।”

সরু সড়কে দ্বিতল বাস চলার অনুমতি ছিল কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে উপাচার্য বলেন, “যারা পিকনিকের আয়োজন করেছে তারা কেন দ্বিতল বাস নিল এবং সে রাস্তায় তা চলাচলে অনুমতি ছিল কি-না তা আমার জানা নেই। এটা তো ভালো জানার কথা বিআরটিসির। কারণ তারা বাস ভাড়া দেয়। বিষয়গুলো খতিয়ে দেখা হবে।”

ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ হস্তান্তর

এদিকে তিন শিক্ষার্থীর মরদেহ তাদের পরিবার ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ময়নাতদন্ত ছাড়াই স্বজনদের কাছে সন্ধ্যায় বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. গোলাম ফেরদৌস জানান।

এর মধ্যে মীর মোজাম্মেল নাঈম ফেনীর মাস্টারপাড়া এলাকার মোতাহার হোসেনের ছেলে, জোবায়ের আলম রাজশাহীর রাজপাড়া ডিঙ্গাবো এলাকার জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে এবং মুবতাছিন রহমান মাহীন রংপুর সদরের ইমতিয়াজুর রহমানের ছেলে।

হাসপাতালের পরিচালক বলেন, আহত মিরপুর কাজীপাড়া এলাকার কাবিদুল ইসলাম আলিফ (২২) এবং ঢাকার কামরাঙ্গীরচর এলাকার নাফিজ আলম খানকে (২২) বিকালে ঢাকার আহসানিয়া মিশন হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *